শুভক্ষণে মন্দিরের দ্বার উন্মোচন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে দরজা ঠেলে ঢুকলেন মন্দিরের ভিতরে। অক্ষয় তৃতীয়ার পুণ্যতিথিতে বুধবার দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন হয়ে গেল। সারা বিশ্বের শান্তিকামনা করে জগন্নাথ মন্দিরে ঢোকেন মুখ্যমন্ত্রী। বেলায় দেবদেবীদের বিগ্রহে প্রাণ প্রতিষ্ঠা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। মাহেন্দ্রক্ষণে মন্দিরের উদ্বোধনের আগে শিল্পী ও স্থপতিদের অভিনন্দন জানালেন মমতা।বলেন জয় জগন্নাথ-জয় বাংলা বলে এই জগন্নাথ দেবের মন্দির মা-মাটি-মানুষকে উৎসর্গ করলাম। সম্পূর্ণ শাস্ত্রীয় রীতি মেনে গত কয়েক দিন ধরে হয় বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান।
কলসযাত্রার পর মঙ্গলবার মহাযজ্ঞ করা হয়। আর বুধবার প্রতিমার প্রাণ প্রতিষ্ঠা সাথে জগন্নাথ মন্দির দ্বারোদ্ঘাটন হল। এই শুভক্ষণে দিঘায় যেন চাঁদের হাট বসেছিলো। অক্ষয়তৃতীয়ার মাহেন্দ্রক্ষণ ছিলো দুপুর ৩টে থেকে ৩টে ১৫ মিনিট পর্যন্ত। তাই ওই সময়ের মধ্যে মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন হয়। দ্বারোদ্ঘাটন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা নিজে। তার পর পাঁচ মিনিটের জন্য মন্দিরের দরজা সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটনের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। প্রথমেই মমতা উপস্থিত শিল্পী, পুরোহিতবৃন্দ, সন্ন্যাসী, তারকা এবং স্থানীয় মানুষকে ধন্যবাদ জানান। মমতা এদিন বলেন, সব ধর্মের লোক এসেছে। স্থানীয়দের সাহায্য পেয়েছি, সেলেব-শিল্পপতি সবাইকে ধন্যবাদ। সনাতন ব্রাহ্মণ ধর্ম, আদ্যাপীঠের মহারাজ, স্বামীজির বাড়ি, বেলুড় মঠ, জয়রামবাটি, কামারপুকুর, কালীঘাট, ইসকন, পুরীর দ্বৈতপতি সবাই এসেছেন। সকল ধর্ম, বর্ণের মানুষ এসেছেন।
তিন বছর ধরে কাজ শেষ হয়েছে। হিডকোর সকলকে অভিনন্দন। যাঁরা এই কাজ করেছেন সকলকে ধন্যবাদ। মন্দির চত্বরকে কেন্দ্র করে ৫০০-র বেশি গাছ বসানো হয়েছে। হাজার হাজার বছর ধরে তীর্থস্থান হিসেবে পর্যটক তরঙ্গে উন্মদনার প্লাবন তৈরি করবে এই মন্দির। সবাই আসুন। সবারে করি আহ্বান। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তথ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক বিভাগকে আমি দায়িত্ব দিচ্ছি যাতে একটু করে প্রসাদ ও জগন্নাথ দেবের ছবি পশ্চিমবঙ্গের সকলের বাড়ি ও ভারতের বিখ্যাত মানুষের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া। ইসকন ভোগের ব্যবস্থা করবে রোজ। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে সোনার ঝাঁটা উপহার দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রথযাত্রার সময় সোনার ঝাঁটা দিয়ে জগন্নাথদেবের যাওয়ার পথ ঝাঁট দেওয়া হয়। এই রীতি বহু প্রাচীন।
সেই রীতি মেনেই সোনার ঝাঁটা উপহার দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সোনার ওই ঝাঁটাটি তৈরির জন্য নিজের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে আগেই ৫,০০,০০১ টাকা দিয়েছিলেন তিনি। দ্বারোদ্ঘাটনের শুভক্ষণের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দেখা যায় প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে। দেব, জুন মালিয়া, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, লাভলি মৈত্র, জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, রূপঙ্কর বাগচি, শ্রীকান্ত মোহতা, অরিন্দম শীল, নৃত্যশিল্পী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখ ছিলেন দিঘায়। জগন্নাথদেবের টানে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন টেলিপর্দার তারকারাও।