তবে ভারতের সামরিক শক্তির সঙ্গে শেষমেশ পেরে উঠতে না পেরে কাকুতিমিনতি করেছে ঘাত-প্রতিঘাত বন্ধের জন্য। পাকিস্তানের সেই আর্জি মেনে সংযম দেখিয়েছে ভারত। শনিবার বিকেল ৫টা থেকে ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয়েছে দু’পক্ষ। আপাতত সীমান্তে যুদ্ধের সাইরেন থেমেছে। ১২ মে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই বিরতি জারি থাকবে বলে জানানো হয়েছে। তবে ইসলামাবাদের এই আর্জি মেনে নিলেও প্রতিবেশী দেশের প্রতি কোনওভাবে বাড়তি নমনীয়তা দেখাচ্ছে না নয়াদিল্লি। সূত্রের খবর, পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানকে শিক্ষা দিতে সিন্ধু জলচুক্তি যে বাতিল করা হয়েছিল, তা আপাতত বাতিলই থাকবে।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গিদের বুলেটবৃষ্টিতে রক্ত ঝরেছে ২৬ নিরীহ মানুষের। পাক মদতপুষ্ট লস্কর জঙ্গিরা এই নাশকতা ঘটিয়েছে, একের পর এক এই প্রমাণের জেরে পরেরদিন অর্থাৎ ২৩ এপ্রিলই কার্যত পালটা দিতে শুরু করে ভারত। সিন্ধু জলচুক্তি বাতিল করে দেয় নয়াদিল্লি। এই চুক্তি অনুযায়ী, সিন্ধু নদের পাঁচ উপনদী থেকে ৮০ শতাংশ জল পেত পাকিস্তান। তাতেই সে দেশের চাষাবাদ, পানীয় জলের অধিকাংশ চাহিদা মিটত। কিন্তু পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর সেই চুক্তি বাতিল করে ভারত। পালটা দিতে সীমান্ত শান্তি বজায়ের হাতিয়ার ঐতিহাসিক শিমলা চুক্তি বাতিল করে পাকিস্তান।
এরপর থেকে ক্রমাগত সীমান্তে উসকানি দিতে থাকে পাক সেনা। টানা ১২ দিন ধরে জম্মু-কাশ্মীরের বিভিন্ন সীমান্তে হামলা, গুলিবর্ষণ চলে। যদিও সবকটি আক্রমণেরই প্রত্যুত্তর দিয়ে সীমান্তে অনুপ্রবেশ রুখে দিয়েছেস ভারতীয় সেনা। ৭ মে মাঝরাতে পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও পাক ভূখণ্ডের জনবহুল এলাকা বাদ দিয়ে শুধুমাত্র জঙ্গি ঘাঁটিগুলিকে টার্গেট করে আকাশপথে হামলা চালায় ভারতীয় সেনা। তাতে অন্তত ৯টি জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে গিয়েছে, ১১০ জঙ্গি নিকেশ হয়েছে বলে পরে সাংবাদিক বৈঠকে জানায় সেনা। সেসব ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে শনিবার, ১০ মে বিকেলে অবশেষে পাকিস্তানের আর্জি মেনে সংঘর্ষবিরতির পথে হেঁটেছে ভারত।