চাকরি ফিরে পেতে যেসব যোগ্য শিক্ষক বিকাশ ভবন ঘেরাও করে পুলিশের লাঠি খেলো। রক্তাক্ত হল। তৃণমূল কংগ্রেসের সব্যসাচী দত্তের ঘনিষ্ঠ বাহিনী তাদের পেটালো। শিক্ষকদের চোখ নষ্ট হল, হাত পা ভাঙলো, মাথাও। এবার সেই আন্দোলনে যোগ দেয়া ১৫ জন শিক্ষককে ভারতীয় ন্যায় সঙ্গীতার বিভিন্ন ধারা উল্লেখ করে বিধাননগর উত্তর থানা শমন পাঠালো। ওই সময় বলা হয়েছে থানায় যদি কেউ হাজিরা না দেয় তাহলে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার আইনে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।
অভিযোগের মূল তিনটি দিক হলো সরকারি অফিস বন্ধ রাখা। সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর। কর্মীদের আটকে রেখে নির্যাতন। এইসব অভিযোগের বেশির ভাগই জামিন অযোগ্য ধারা। আন্দোলনকারী শিক্ষকরা অবশ্য বিকাশ ভবনের সামনে তাদের অবস্থান বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন। এদিনও তারা বলেছেন আমরা যোগ্য শিক্ষক। যাদের দুর্নীতিতে চাকরি গেছে আমাদের তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে আর ফিরিয়ে দিতে হবে আমাদের চাকরি। কোনভাবেই আমরা ফের পরীক্ষাতে বসব না। চাকরি হারানো শিক্ষকরা এর মধ্যেই তাদের স্কুলের খাতা দেখছেন। বলেছেন ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমাদের মেয়াদ রয়েছে যোগ্য শিক্ষকদের কাজ করার।কিন্তু আমরা যোগ্য হয়ে বিদ্যালয় মাথা উঁচু করে ঢুকতে চাই। আমরা কারুর দয়ায় চাকরি পাইনি আর টাকা দিয়েও চাকরি কিনি নি। তাই আমাদের হকের চাকরি ফিরিয়ে দিতেই হবে।
চাকরি হারা শিক্ষকদের আন্দোলনের একটি বড় মুখ হল মেহেবুব মন্ডল। তিনি বলেছেন থানা ডেকেছে। নোটিশ পাঠিয়েছে। কিন্তু আমরা আমাদের আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করার পরেই ঠিক করব যাব কিনা। মেহেবুব তো পুলিশ মঙ্গলবার তলব করেছে। তিনিও বলেন আমি আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলার পরেই সিদ্ধান্ত নেব। তার পাল্টা অভিযোগ নটি সে একটি হাস্যকর যুক্তি দেয়া হয়েছে।
তা হল আমরা সরকারি কর্মচারীদের কাজে বাধা দিয়েছি। কিন্তু পুলিশ বোধহয় এখন ভুলে গিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আমরা যোগ্য শিক্ষকরা এখনো সরকারি কর্মচারী। সরকারি কর্মচারী হিসাবে আমরা বেতন পাই। তিনি বলেন সার্বিক এবং ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। আমাদের বহু সতীর্থ গুরুতর জখম অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি। অনেকেই হাত-পা ভাঙ্গা সত্ত্বেও প্লাস্টার জড়িয়ে অথবা ট্রেড ব্যান্ডেজ বেঁধে ধরনায় বসে আছেন। অনেক মহিলা সহকর্মীও বসে রয়েছেন এই ধরনায় রাত ভোর। আমরা তো এখনো বড় ধরনের আন্দোলনের কথা ঘোষণাই করিনি। সেদিন যদি আসে তাহলে ভয়ংকর চেহারা নেবে। ইতিমধ্যেই রাজনীতির পতাকা ছেড়ে বিভিন্ন নেতৃত্বকে তাদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আবেদন করেছেন।
সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ এবং বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী, সজল ঘোষ কৌস্তব বাগচিরা অবস্থান মঞ্চে যান। গোটা অবস্থান মঞ্চ এলাকায় পুলিশ মোতাইন রয়েছে। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও রাজনৈতিক দলের তরফে পানীয় জল, শুকনো খাবার এবং বায়োটয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাদের হাতে চক গাছটা থাকার কথা সেইসব শিক্ষকরা অবস্থান এলাকা নিজেরাই ঝার দিয়ে সাফ করছেন। পথচারীদের চলাফেরার জন্য রাস্তাও তারা পরিষ্কার রাখছেন। তবে মেয়ে মুখ মন্ডল বলেছেন পুলিশ দিয়ে আমাদের দমন করার চেষ্টা চলছে। আমাদের যদি চাকরি না থাকে তবে কিসের ভয়?





