রাত নামলেই শোনা যেত কান পাতলে কেউ যেন হাঁটে, নিঃশব্দে। বাতাস থমকে যেত, কুকুর হাউল দিত একটানা। কেউ বলত, ‘ওই যে গেছে ছায়াটা, রমেশ না সোমেশ?’ বাঁকুড়ার ইন্দপুরের বাঁশকেটিয়া গ্রামে গত তিন বছরে যা ঘটেছে, তা যেন কোনো পুরনো ভৌতিক কাহিনিকেও হার মানায়।
এই গ্রামেরই কৃষিজীবী এক পরিবারে পরপর তিন বছরে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। প্রথমে রমেশ বাউরী, তার পরের বছর দাদা সোমেশ, আর সম্প্রতি অকালমৃত্যু হয় বছর আঠারোর দেবব্রত বাউরীর। আর এই মৃত্যুগুলো ঘিরেই শুরু হয় কানাঘুষো, গুজব, আর তীব্র ভূতের ভয়।
একাংশ প্রতিবেশী দাবি করে রাতে অদ্ভুত আওয়াজ শোনা যায়, আলো নিভে যায় হঠাৎ, জিনিসপত্র নড়ে ওঠে একা একাই। ভয় এমন জাঁকিয়ে বসে যে মৃতদের পরিবারের লোকজন গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হন। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে।
এই পরিস্থিতিতে এগিয়ে আসে স্থানীয় পুলিশ, প্রশাসন ও বিজ্ঞান মঞ্চের কর্মীরা। তাঁরা গ্রামে গিয়ে বলেন, এসব মৃত্যু কোনও অশরীরীর অভিশাপ নয়। সবটাই রোগবালাইয়ের পরিণাম। কুসংস্কার না ছড়াতে সকলে মিলে বোঝানোর চেষ্টা করেন তাঁরা। প্রয়োজনে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।
ভয় এখনও পুরো কাটেনি, তবে সত্যি ও যুক্তির আলোয় ধীরে ধীরে গা ছাড়ছে সেই অন্ধকার ছায়া।