কমিউনিস্ট পার্টির অগ্রগতি ঘটে মতাদর্শ ও শৃংখলার মধ্য দিয়ে। পার্টির শতবর্ষে পার্টিকে আরও সুশৃংখল, সুশিক্ষিত ও শক্তিশালী করার লক্ষ্য নিয়ে শেষ হল ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির ২৬তম জেলা সম্মেলন। সম্পাদকীয় প্রতিবেদনের উপর আলোচনা করতে গিয়ে বেশিরভাগ প্রতিনিধি সংগঠনকে শক্তিশালী করার উপরই জোর দিয়েছেন।
তার জন্য পার্টির শাখা সংগঠনগুলির বৃদ্ধি যে গুরুত্বপূর্ণ তা স্মরণ করে দিয়েছেন পার্টির রাজ্য পরিষদের সম্পাদক স্বপন ব্যানার্জি। রবিবার বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দিরে সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে অধিবেশনে তিনি বলেন, সিপিআই এখনও হীন হয়ে যায়নি। আমাদের মতাদর্শে বিশ্বাসী কোন নেতাই দল ছেড়ে অন্য দলে যাননি। হয়তো কেউ কেউ বসে গিয়েছেন, তাদেরকে সক্রিয় করে আবার দলে ফিরিয়ে আনতে হবে। তাহলেই আমাদের পার্টি আরও শক্তিশালী হবে। আগস্টে দলের রাজ্য সম্মেলন সফল করার জন্য সকলের সহযোগীতা প্রয়োজন।
প্রথম দিনই অধিবেশনে সম্পাদকীয় খসড়া প্রতিবেদন পেশ করেন বিদায়ী সম্পাদক অশোক সেন। দ্বিতীয় দিন এই প্রতিবেদনের উপর বাইশ জন প্রতিনিধি আলোচনা করেন। জবাবী ভাষণ দিতে গিয়ে বিদায়ী সম্পাদক বলেন, আমাদের আলোচনার মূল বিষয় সিপিআইকে শক্তিশালী করা। মতাদর্শ এবং শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে সেই দায়িত্ব পালন করতে হবে। অধিবেশনে সম্পাদকীয় খসড়া প্রতিবেদন সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়।
অধিবেশনে বিভিন্ন গণসংগঠনের মধ্যে এআইওয়াইএফ-র পক্ষে স্বপন মিত্র, এআইএসএফের পক্ষে বিবেক গিরি, মহিলা সমিতির পক্ষে নমিতা দে, সারা ভারত কৃষক সভার পক্ষে পীযূষ মহন্ত, এআইটিইউসি-র পক্ষে মিহির পাহাড়ি এবং আইপিসিএ-র বল্পব ভট্টাচার্য সম্মেলনকে অভিনন্দন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।
ক্রেডেনসিয়াল কমিটি রিপোর্ট অনুযায়ী এবারের সম্মেলনে প্রতিনিধিদের মধ্যে প্রবীণতম পার্টির সদস্য ছিলেন গুণধর পাত্র। তিনি ১৯৫০-এর দশকের পার্টির সদস্য। প্রবীনতম প্রতিনিধি হলেন গঙ্গাধর মাহাতো। তার বয়স ৯৩ বছর। তিনি ১২ বার পর্যন্ত জেল খেটেছেন। ২৫ বছরের নিচে ৫ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া তিন জন অধ্যাপক ছিলেন যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ডক্টরেট।
সম্মেলন থেকে রাজ্য সম্মেলনের জন্য ১৯ জন প্রতিনিধির নাম ঘোষণা করা হয়। এবারের জেলা কমিটিতে পূর্ণ সদস্য হয়েছেন ৫১ জন, প্রার্থী সদস্য ৬ জন এবং স্থায়ী আমন্ত্রিত সদস্য রয়েছেন ৯ জন। জেলা কার্যকরী কমিটির সদস্য হয়েছেন ২৩ জন। সম্মেলনে সর্বসম্মতভাবে জেলা সম্পাদক হয়েছেন বিপ্লব ভট্ট এবং সহ সম্পাদক হয়েছেন শিশির পাত্র ও পীযুষ মহন্ত। কোষাধ্যক্ষ হয়েছেন চঞ্চল মাসান্ত।