এরই মধ্যে মঙ্গলবার ভোররাতে যুযুধান দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও এর পরেও ইজরায়েলের বেশ কিছু জায়গায় ইরান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ। এদিকে তাঁদের উপর মার্কিন হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ করায় বিশ্বজুড়ে জ্বালানী তেলের জোগান কমবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যার ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়তে পারে তেলের দাম। একইসঙ্গে ভারতেও জ্বালানী তেলের দাম বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে কেন্দ্রের তরফে আশ্বস্ত করা হয়েছে ভারতে এই মুহূর্তে যথেষ্ট পরিমাণ অপরিশোধিত তেল মজুত রয়েছে, ফলে এখনও দাম বাড়ার কোনও আশঙ্কা নেই।
পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী হরদীপ সিং জানিয়েছেন, ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ করলেও ভারতে তেলের দামে খুব একটা প্রভাব পড়বে না। কেননা ভারত স্ট্র্যাটেজিক পেট্রোলিয়াম রিজার্ভারের মাধ্যমে অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্নাটক এবং তামিলনাড়ুতে অপরিশোধিত তেল মজুত রেখেছে। তেলের আমদানি বন্ধ হলেও, এই রিজার্ভার থেকে তেলের জোগান দেওয়া হবে। কিন্তু এই SPR কী?
স্ট্র্যাটেজিক পেট্রোলিয়াম রিজার্ভ পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রকের অধীনে ইন্ডিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পেট্রোলিয়াম রিজার্ভ লিমিটেড দ্বারা পরিচালিত হয়। SPR ভূপৃষ্ঠ থেকে ৯০ মিটার নীচে অবস্থিত এবং দৈর্ঘ্যে এক কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। উচ্চতা একটি ১০ তলা ভবনের সমান। বর্তমানে দেশে তিনটি ভূগর্ভস্থ শিলা গুহা বা SPR রয়েছে। সেখানে মোট ৫.৩৩ মিলিয়ন মেট্রিক টন অপরিশোধিত তেল মজুত রয়েছে।
এদিকে ২০২১ সালে কেন্দ্রীয় সরকার ওড়িশার চান্দিখোল এবং কর্নাটকের পাদুরে মোট ৬.৫ এমএমটি ধারণক্ষমতাসম্পন্ন দু’টি SPR তৈরির অনুমোদন দিয়েছে। এই দু’টিতে ৫.৩৩ মিলিয়ন টন অপরিশোধিত তেল মজুত করা সম্ভব। এই দু’টি নতুন SPR ইউনিট তৈরি হলে যে পরিমাণ তেল মজুত থাকবে তাতে দেশের দৈনিক চাহিদা মতো ২২ দিনের তেলের জোগান দেওয়া সম্ভব। এদিকে শুধু SPR-এ তেলের মজুত রয়েছে এমটা নয়। দেশের বিভিন্ন জায়গায় তেল বিপণন কোম্পানিগুলির বাফার স্টকে বিপুল পরিমাণ তেল মজুত রয়েছে বলে জানানো হয়েছে কেন্দ্রের তরফে।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কোটাক সিকিউরিটিজের ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমিত পোখরনা বলেন, “ভারত বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৫০ লক্ষ ব্যারেল তেল ব্যবহার হয়। সুতরাং, যদি তেল আমদানি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে SPR-এ রিজার্ভ তেল প্রায় ৯-১০ দিনের চাহিদা মেটাতে পারবে। এছাড়াও তেল বিপণন সংস্থাগুলির বাফারে যে পরিমাণ তেল রয়েছে তাতে প্রায় ৭৪ দিন পর্যন্ত তেলের জোগানে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তবে আমদানি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেলে সমস্যা বাড়তে পারে।