ব্যবসার টোপ দেখিয়ে যুদ্ধ থেকে সরে আসার দাবিও করেছেন ভারত ধারাবাহিক ভাবে অস্বীকার সত্ত্বেও। এ বার খাস ট্রাম্পের ডেরায় গিয়ে এই মধ্যস্থতার তত্ত্বে জল ঢালার চেষ্টা করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। চতুর্দেশীয় অক্ষ কোয়াড-এর বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে আমেরিকা সফরে গিয়ে তিনি জানালেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভান্স যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করেন, সেই সময়ে মোদীর পাশেই ছিলেন তিনি। কথোপকথনে যুদ্ধবিরতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের যোগসূত্রের কথা এক বারও ওঠেনি।
নিউ ইয়র্কের একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জয়শঙ্করকে প্রশ্ন করা হয়, ব্যবসা-বাণিজ্যের টোপ দিয়ে আমেরিকা এবং পাকিস্তানকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করানো হয় বলে যে দাবি করছেন ট্রাম্প, তা কতটা সত্য? বিদেশমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি বলতে পারি যে, গত ৯ মে ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভান্স যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলেন, আমি ওই ঘরেই ছিলাম। উনি জানান, পাকিস্তান ভারতের উপর বড় আঘাত হানতে চলেছে…আমরা কিছু বিষয় মেনে নিতে পারিনি। পাকিস্তান কী করার হুমকি দিচ্ছে, তা প্রধানমন্ত্রীর কাছেও পরিষ্কার হয়নি। বরং প্রধানমন্ত্রী বুঝিয়ে দেন যে, আমাদের তরফেও তীব্র জবাব মিলবে।’’ জয়শঙ্কর জানান, তার পরের দিন সকালে আমেরিকার বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো মোদীর সাথে যোগাযোগ করে বলেন যে, পাকিস্তান আলোচনার জন্য প্রস্তুত। আর তারও কিছু পরে, পাকিস্তানের সামরিক অভিযানের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল কাশিফ আবদুল্লাহ সরাসরি লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাইয়ের কাছে যুদ্ধবিরতির অনুরোধ জানান।
আমেরিকার প্রেসিডেন্টের বক্তব্যকে খারিজ করার পাশাপাশি পহেলগাম প্রসঙ্গেও সরব হয়েছেন বিদেশমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘অর্থনৈতিক যুদ্ধের কৌশল ছিল (পহেলগাম হামলা)। কাশ্মীরের পর্যটন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়াই লক্ষ্য ছিল সন্ত্রাসবাদীদের, যা কিনা কাশ্মীরিদের অর্থনীতির ভিত্তি। পাশাপাশি ধর্মীয় হিংসাও উস্কে দেওয়ার চেষ্টা হয়, আর তাই হত্যা করার আগে ধর্ম জানতে চাওয়া হয়েছিল। জঙ্গিরা পার পাবে না বলে তখনই সিদ্ধান্ত নিই আমরা। সীমান্তের ও-পারে বলে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না, এই ধারণা ভেঙে দেওয়া জরুরি ছিল। আমরা তেমনই পদক্ষেপ করেছি।’’
সাক্ষাৎকারে চিনের প্রসঙ্গও এসেছে। চিনের সঙ্গে সম্পর্কের নিরিখে ভারত-আমেরিকার সম্পর্ককে দেখাটা অতিসরলীকরণ হিসেবে বর্ণনা করে বিদেশমন্ত্রী বলেন, “এটা শুধু অতি সরলীকরণই নয়, ভারত-আমেরিকা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে ভুল বোঝানোর চেষ্টাও বটে।