- Advertisement -spot_img
Homeরাজ্যরাজ্যে ফের ধর্ষণের স্বীকার হল ডাক্তারি পড়ুয়া

রাজ্যে ফের ধর্ষণের স্বীকার হল ডাক্তারি পড়ুয়া

- Advertisement -spot_img

আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তারি পড়ুয়ার ওপর নির্যাতনের ঘটনায় এখনো পর্যন্ত বিচার পাইনি তার পরিবার। দেখতে দেখতে প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় কেটে গিয়েছে। ধীরে-ধীরে আরজিকর নিয়ে বিরোধী দলের আন্দোলনও কিছুটা থিতিয়ে গেলেও ফের ধর্ষণের ঘটনায় শনিবার সকাল থেকেই চাঞ্চল্য ছড়ায় দুর্গাপুরে। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছে রাজ্য জুড়ে।

 

পশ্চিম বর্ধমান জেলার পাশাপাশি রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ আন্দোলনে নামেন বিরোধীদলের নেতা কর্মীরা। যদিও ঘটনার খবর পাওয়ার পর থেকেই ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ঘটনার প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত্রে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ আইকিউ সিটি-তে দ্বিতীয় বর্ষের ডাক্তারি পড়ুয়া কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে তার এক ছেলে বন্ধুর সঙ্গে বেরিয়েছিলেন। ওই বেসরকারি হাসপাতালের পেছনের জঙ্গলে তাকে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। ওই পড়ুয়ার বাড়ি উড়িষ্যার জলেস্বরে।

 

দুর্গাপুরে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ আইকিউ সিটি’র দ্বিতীয় বর্ষের ডাক্তারি পড়ুয়া সে। খবর পাওয়ার পরই ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ। ওই কলেজ ছাত্রীর সঠিক তদন্তের দাবিতে শনিবার সিপিআইএম বেসরকারি কলেজ চত্বরে বিক্ষোভ দেখায়। এর সাথে সাথে ওই বেসরকারি কলেজের যে সমস্ত ডাক্তারি পড়ুয়ারারা রয়েছে তারাও বিচারের দাবিতে কলেজ চত্বরেই ধর্ণায় বসে পড়ে। এবং তারাও বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। সিপিএমের পক্ষ থেকে ডিওয়াইএফআই এবং এসএফআইয়ের ছাত্রছাত্রীরা বিক্ষোভ দেখিয়ে ধরনায় বসে পড়ে। অন্যদিকে বিজেপি বিধায়কের নেতৃত্বে কলেজ চত্বরেই প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয়। এছাড়াও কংগ্রেসের তরফ থেকে জেলা সভানেত্রী মেঘনা মান্নার নেতৃত্বে একটি দল কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে গেলেও দেখা না পাওয়ায় তারাও ক্ষোভে ফেটে পড়েন। কলেজ চত্বরে পরিস্থিতির সামাল দিতে নামে বিশাল পুলিশ বাহিনী।

 

অন্যদিকে পুলিশের একটি দল জঙ্গলেও তল্লাশি চালায়। জঙ্গল থেকে নমুনা সংগ্রহের কাজ চালায় পুলিশ। অন্যদিকে বিজেপির একটি দল নিউটনশিপ থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায়। অন্যদিকে খবর পেয়ে উড়িষ্যা থেকে নির্যাতিতার বাবা ও মা হাসপাতালে পৌঁছালে নির্যাতিতার বাবা ফোনে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সাথে কথা বলেন। জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় উড়িষ্যা পুলিশের পক্ষ থেকে একটি সিট গঠন করা হয়েছে। তারাও ঘটনার তদন্তে দুর্গাপুরের উদ্যেশ্যে রওনা দিয়েছেন। নির্যাতিতার মা জানিয়েছেন, মেয়ে রাতে তার ছেলে বন্ধুর সাথে বেরিয়েছিল খাবার খেতে। তার পর ওই ছেলেটাই গেটের বাইরে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে জোর করে। এর পরেই জঙ্গলে কয়েকজন মিলে তুলে নিয়ে যায়। সেই সময় তার ছেলে বন্ধুটি পালিয়ে যায়।

 

গোটাটাই পরিকল্পনা করেই করা হয়েছে বলে তার দাবি। মেয়ের বান্ধবীর কাছে ফোনে খবর পেয়ে তারা রাতেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। এদিন কলেজ কর্তৃপক্ষ সংবাদ মাধ্যমের সামনে কিছু না বললেও তারা এই বিষয়ে একটি প্রেস রিলিজ জারি করে। যেখানে কে কখন ক্যাম্পাসের ভিতরে ও হোস্টেলের ভিতরে ঢোকে সেই সমস্ত সময় তুলে ধরা হয়েছে। এবং শেষ সময় প্রধান দরজার বাইরে কখন বের হয়। এবং গোটা ঘটনা যেহেতু ক্যাম্পাসের বাইরে হয়। তাই তাদের কিছুই জানা নেই বলে দাবি করা হয়েছে। বিধায়িকা অগ্নিমিত্রা পল জানান, বাংলায় নারীদের কোনো নিরাপত্তা নেই। শিশুকন্যা থেকে বৃদ্ধা দিনের পর দিন নির্যাতন হচ্ছে।

 

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আবার ধর্ষণের রেট বেঁধে দিয়েছেন। কেউ খাবার কিনতে গেলে ধর্ষনের স্বীকার হচ্চে। কেউ বাজার করতে বেরিয়ে গণ ধর্ষণের স্বীকার হচ্ছে। গোটা বাংলা জুড়ে এখন এটাই চলছে। পাশাপশি এদিন জাতীয় মহিলা কমিশনের একটি দল আসে। জাতীয় মহিলা কমিশনের রাজ্য সদস্য অর্চনা মজুমদার নির্যাতিতার সাথে কথা বলার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তোলেন। প্রথমত, সিসিটিভি ক্যামেরা সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি বলেন, নিরাপত্তা জোরদার নেই এখানে সমস্ত জায়গাতে সিসিটিভি নেই, এই দায়বদ্ধতা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না। দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন ধরনের খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণ এখানে না পাওয়ার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের কলেজের বাইরে যেতে হয়। জঙ্গলে রাস্তা ধরে এটাও ঠিক নয়। রাস্তায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থাও নেই, এর জন্য দুর্গাপুরের প্রশাসনকে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেন তিনি।

 

এছাড়া তিনি বলেন, ছাত্রী ভালো আছে। তার চিকিৎসা চলছে। মানসিকভাবে সে একটু ভেঙ্গে পড়েছে, তাই বিশেষ কিছু বলার মত অবস্থায় নেই এবং সমস্ত বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে এই ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে, আরো চারজনের উপর নজরদারি চলছে। পাশাপশি এদিন ডাক্তারি পড়ুয়া ধর্ষণ নিয়ে কুনাল ঘোষ বলেন, ঘটনা তো কিছু একটা ঘটেছে। এটা পুলিশ তদন্ত করে দেখুক এর সঙ্গে তো কোনো রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই। বিজেপি শকুনের রাজনীতি করছে। অন্যদিকে রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী শশী পাঁজাও পুলিশের উপর ভরসা রাখার কথা জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী তদন্ত করবে পুলিশ।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img
Stay Connected
16,985FansLike
2,458FollowersFollow
61,453SubscribersSubscribe
Must Read
- Advertisement -spot_img
Related News
- Advertisement -spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here