ফের মাছ ধরতে গিয়ে বাংলাদেশে আটক পশ্চিমবঙ্গের ১৪ জন মৎস্যজীবী। মৎস্যজীবীরা কুলতলির শানকিজাহান গ্রামের বাসিন্দা। গত ১৩ অক্টোবর তাঁরা ‘এফবি শুভযাত্রা’ নামের একটি ট্রলার নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরতে যান। কিন্তু গত শনিবার গভীর সমুদ্রেই ট্রলারের ইঞ্জিন খারাপ হয়ে যায়। ভুলবশত জলসীমা অতিক্রম করতেই তাঁদের আটক করা হয় বলে জানা যাচ্ছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ট্রলারটিকেও। জানা গিয়েছে, বাংলাদেশে আটক ১৪ জনের মধ্যে কাকদ্বীপের ২ জন, হুগলির ২ জন ও বাকিরা কুলতলি এলাকার বাসিন্দা। ঘটনার খবর আসতেই উৎকন্ঠায় মৎস্যজীবীদের পরিবার।
দ্রুত মুক্তির দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। এই বিষয়ে সরকার এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপের দাবিও জানিয়েছেন। তারপরেই স্থানীয় প্রশাসনের কাছে খোঁজ নিল নবান্ন। জানা গিয়েছে, ‘এফবি শুভযাত্রা’ নামে একটি ট্রলার কুলতলির সানকিজাহান থেকে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছিল। প্রায় ১৪ জন মৎস্যজীবীর একটি দল ওই ট্রলারে ছিল বলে খবর। জানা যায়, মাছ ধরার সময় ভারতীয় ট্রলারটি জলসীমা অতিক্রম করতেই বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজটি চিহ্নিত করে। এবং পরে ওই ট্রলারে থাকা সমস্ত মৎস্যজীবীকেই আটক করা হয়। জানা যায়, আটক ট্রলারটিকে বাংলাদেশের মোংলার দিগরাজ নৌঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, ট্রলারে থাকা ইলিশ-সহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ১০ মণ মাছ রাতেই মোংলার ফেরিঘাটে বিক্রি করা হয় বলে খবর।
সমুদ্র উত্তাল থাকায় ট্রলারটি ভাসতে ভাসতে ঢুকে পড়ে বাংলাদেশের জলসীমায়। সীমান্ত অতিক্রম করার কিছুক্ষণের মধ্যেই ট্রলারটিকে আটক করে প্রতিবেশী বাংলাদেশের উপকূলরক্ষী এবং সেনা। তবে বাংলার মানুষ যেখানেই বিপদে পড়েন, সর্বশক্তি দিয়ে রক্ষা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার আটক হওয়া মৎস্যজীবীদের ক্ষেত্রেও যে তা হবে, বলাই বাহুল্য। চলতি বছরের জানুয়ারিতে মুখ্যমন্ত্রীর সহযোগিতায় ঘরে ফিরেছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৯৫ জন মৎস্যজীবী। দুদেশের জলসীমায় আটক মৎস্যজীবীদের গঙ্গাসাগরে হস্তান্তর করা হয়। মৎস্যজীবীদের হাতে তুলে দিলেন আর্থিক সাহায্য এবং কিছু উপহার। তাই এবারেও আশা করা হচ্ছে প্রশাসন হস্তক্ষেপ করলে ঘরে ফিরতে পারবেন কুলতলির মৎস্যজীবীরা।
আটক হওয়ার পর কোন মৎস্যজীবী আর বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করতে করতে পারেননি। তাঁদের বাংলাদেশে আটক হওয়ার খবর সংবাদমাধ্যম থেকে সোশ্যাল মিডিয়া সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় প্রত্যেক পরিবারের একমাত্র রোজগারি সদস্যরাই বাংলাদেশে আটক হওয়ায় দুশ্চিন্তায় কুলতলির শানকিজাহান গ্রামের বাসিন্দারা। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, মৎস্যজীবীদের সংগঠন তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তবে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে দ্রুত ফিরতে পারবেন বলে তাঁরা আশাবাদী।
এর আগে গত ১৪ জুলাই দুটি এবং ৩ আগস্ট একটি ভারতীয় ট্রলার একইভাবে ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকা থেকে আটক করেছিল বাংলাদেশ নৌবাহিনী। সেই রেশ কাটতে না কাটতে ফের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। যা নিয়ে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মৎস্যজীবী মহলে।





