বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। ইতিমধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এসআইআর বা ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা নিয়ে ক্রমেই চড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ। এরই মধ্যে এসআইআরের কাজ যাতে ঠিকভাবে হয়, সেদিকে কর্মীদের মনোযোগী হওয়ার নির্দেশ দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। রাজ্যজুড়ে এখন বিজেপি নেতারা বুথস্তরে ঘুরে ঘুরে কর্মীদের বোঝাচ্ছেন, কীভাবে তালিকা খতিয়ে দেখতে হবে। বিএলএ-২ বা বুথ লেভেল এজেন্ট-দের প্রশিক্ষণ চলছে জোর কদমে। কোথায় ভোটার বাড়ল, কীভাবে বাড়ল, সেটা বুঝে নিচ্ছেন নেতা-মন্ত্রীরা।
সূত্রের খবর, ভোটার তালিকা সংক্রান্ত বৈঠকে সম্প্রতি দলের কর্মীদের এ ব্যাপারে আরও সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন শমীক। পরিষ্কার ভাষায় বুঝিয়ে দিয়েছেন, এসআইআর নামের কাজটাই যদি ঠিকঠাক না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে দল চালানোই মুশকিল হয়ে যাবে। এসআইআর মানে ভোটার তালিকা ঘেঁটে দেখা, কারা থাকা উচিত, কারা বেমানান, সেটা খুঁজে বের করা। এই কাজ ঠিকঠাক না হলে কী হবে? সোজা কথা, ভোটার তালিকায় যদি অন্য কেউ ঢুকে পড়ে, তাহলে ভোটেও হার অবধারিত। আর তাই নিয়েই এখন দলজুড়ে চরম তৎপরতা।
সেই তালিকায় নজর দিতে গিয়েই বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য একেবারে সোজা ভাষায় বলে দিয়েছেন, এই কাজটা আর পাঁচটা কাজের মতো ভাবলে চলবে না। এসআইআরে গাফিলতি মানেই ২০২৬-এ ভোটে মুখ থুবড়ে পড়া। তখন তৃণমূল শুধু ভোট নয়, আপনাদের পার্টি অফিসও দখল করে নেবে। তিনি এটাও বলেছেন, ‘এসব এয়ারকন্ডিশন ঘরে বসে ভাবলে চলবে না। তখন হয়তো ভার্চুয়াল মিটিং ডাকলেও কেউ আসবে না।’
ভোটার বাড়ছে কোথায়? বিজেপির অভিযোগ, ২৯৪ টি আসনের মধ্যে ২৫৮ টিতেই অস্বাভাবিক হারে ভোটার বেড়েছে। যেমন- রাজারহাট-নিউটাউন: বেড়েছে প্রায় ৭৪ শতাংশ। একইভাবে বারুইপুর পূর্ব, সোনারপুর উত্তর, ক্যানিং পূর্বে বাড়ছে চোখে পড়ার মতো। এ নিয়ে বিজেপির সন্দেহ— এত ভোটার স্বাভাবিক নয়। তাঁদের অভিযোগ, সীমান্ত এলাকা ও শহরতলিতে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ও রোহিঙ্গাদের তৃণমূল জায়গা দিয়েছে। তাই এই হঠাৎ ভোটার বৃদ্ধি।
তৃণমূল যদিও বলছে, ‘নিউটাউনে প্রচুর নতুন ফ্ল্যাট হয়েছে, মানুষ এসেছেন, তাই ভোটার বেড়েছে।’ বিজেপির পাল্টা বক্তব্য, ‘ফ্ল্যাটে মানুষ এলেও, ৭৪% ভোটার বাড়া খুবই অস্বাভাবিক।’ কোথাও কি ভোটার কমেছে? সূত্রের খবর, তিনটি আসনে ভোটার কমেছে, সবকটিই কলকাতায়। ভবানীপুর মুখ্যমন্ত্রীর কেন্দ্র, রাসবিহারী এবং জোড়াসাঁকো এখানে সবচেয়ে বেশি ভোটার কমেছে। বিজেপির বক্তব্য পরিষ্কার— ভোটার তালিকাই যদি ভুল হয়, ভোট আর গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের ভিত্তিটাই নষ্ট হয়ে যায়। তাই এ নিয়ে আর হেলাফেলা নয়।





