আসানসোল-সহ বিভিন্ন অঞ্চলে কালীপুজোর সময় শব্দবাজির কারণে বাতাসের গুণগত মান নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার ভোর পাঁচটা নাগাদ আসানসোলে দূষণের পরিমাণ ছিল ২০৬, যা ‘খারাপ’ শ্রেণির (১০১ থেকে ২০০ পর্যন্ত খারাপ শ্রেণি) অন্তর্ভুক্ত। সোমবার দুপুর পর্যন্ত যা ছিল ১৪১ থেকে ১৪৬–এর মধ্যে। এই মাত্রা শ্বাসকষ্ট ও সিওপিডি-তে আক্রান্তদের জন্য ক্ষতিকর। পিএম ২.৫ থেকে ১০ পর্যন্ত পৌঁছলে তা-ও যথেষ্ট ক্ষতিকারক বলে জানা গিয়েছে।
আসানসোল মহকুমার রানিগঞ্জ, চিত্তরঞ্জন, বরাকর, কুলটি, নিয়ামতপুর, জামুড়িয়া, বারাবনি অঞ্চলে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শব্দবাজির দাপট বেড়েছে। উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক অসিতবরণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, শুধু শব্দবাজি নয়, চরকি, তুবড়ি, রংমশাল থেকেও দূষণ ছড়াতে পারে এবং তথাকথিত ‘গ্রিন বাজি’ থেকেও চোখ-মুখ-নাক জ্বালা করার মতো সমস্যা দেখা যাচ্ছে, যা ইঙ্গিত করে যে সেগুলি হয়তো ভুয়ো আতশবাজি।
তবে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আসানসোলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার সুদীপ ভট্টাচার্য জানান, শব্দবাজি নিয়ে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আসেনি। তিনি দাবি করেন, দীপাবলির সময়ে দূষণের যে মাত্রা (১৪৬ বা ২০০) বলা হচ্ছে, তা গত পাঁচ বছরের তুলনায় অনেক ভালো এবং এর কৃতিত্ব পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের।
অন্যদিকে, বাঁকুড়া শহর ও তার মহকুমায় (বিষ্ণুপুর ও খাতড়া) শব্দবাজির দাপট অন্য বছরের তুলনায় অনেক কম ছিল। সেখানে মোমবাতি, মাটির প্রদীপ বা আলো দিয়ে বাড়ি সাজানোর প্রবণতা বেশি দেখা গিয়েছে। ‘বাঁকুড়া জেলা পরিবেশ যোদ্ধা মঞ্চ’-এর কর্মী মৈনাক অধিকারী এর কারণ হিসেবে মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং পুলিশের তৎপরতাকে ইতিবাচক বলে মনে করেছেন।
কালনা-সহ পূর্বস্থলী, নাদনঘাট, মন্তেশ্বরের বিভিন্ন এলাকায় শব্দবাজি ফাটলেও তার মাত্রা অন্যবারের তুলনায় কম ছিল। পুরুলিয়াতেও শব্দবাজির দাপট কম ছিল এবং কিছু জায়গায় পরিবেশবান্ধব আতশবাজি জ্বালানো হয়েছে। আতশবাজির পরিবর্তে মোমবাতি, মাটির প্রদীপ বিক্রির পরিমাণ বেশি ছিল, যা পরিবেশপ্রেমীদের কাছে স্বস্তির। স্থানীয়রা মনে করেন, সাধারণ মানুষ সচেতন থাকলে ভবিষ্যতে এই ছবি আরও সদর্থক হবে।





