কলকাতায় দুর্গাপুজোর পরে বড়-বড় পুজো কমিটি গুলি কে নিয়ে কার্নিভালের সূচনা করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা বিশ্বের দরবারে একটা জায়গা করে নিয়েছে এই পুজো কার্নিভাল। সেই পুজো কার্নিভাল দেখতে ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশ থেকে সাধারণ মানুষ ছুটে আসেন প্রতিবছর কলকাতায়। সেই একই ধরনের ভিন্ন এক কার্নিভাল হয়ে আসছে বুদবুদের কোটা গ্রামে। গত প্রায় কয়েকশো বছর ধরে পূর্ব বর্ধমান জেলার বুদবুদের কোটা গ্রামে, কালী পূজার পর ভাই ফোঁটার দিন।
বুদবুদের কোটা গ্রামে যে সমস্ত মন্দির ও বিভিন্ন জনের বাড়িতে হরগৌরী এবং শিবের পূজার আয়োজন হয়। সেই সমস্ত দেব-দেবীদের গ্রামের একটি জলাশয়ে ভেলায় চাপিয়ে গোটা জলাশয় প্রদক্ষিণ করানোর রেওয়াজ চলে আসছে গত কয়েকশো বছর ধরে। ভাইফোঁটার দিন বিকেল থেকে শুরু হয় এই ভেলা ভাসা অনুষ্ঠান। সন্ধ্যা হলেই সমস্ত দেব-দেবীর মূর্তি ওই জলাশয়ে বিসর্জন দেওয়া হয়। পাশাপাশি কোটা গ্রামে যে সমস্ত জায়গায় কালীপুজো হয়। সেই সমস্ত দেবী কালীর প্রতিমাও পুকুর পাড়ে নিয়ে আসা হয় বিসর্জনের জন্য।
ভেলা ভাষা অনুষ্ঠানকে ঘিরে জলাশয় এর পাড়ে বসে মেলা। মেলা চলে চার দিন ধরে। প্রতি বছর কোটা গ্রামে এই ভেলা ভাসা অনুষ্ঠানে সমস্ত বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন ভর্তি থাকে। ভেলা ভাসা দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ ভিড় করেন জলাশয়ের পাড়ে। দীর্ঘ কয়েকশো বছর ধরে এই রীতি চলে আসছে এখানে। গ্রামবাসীদের মতে এটাই তাদের কার্নিভাল। গোটা জলাশয় জুড়ে ভেলায় ঠাকুরকে উঠিয়ে প্রদক্ষিণ করা হয় আর দর্শনার্থীরা পাড়ে দাঁড়িয়ে সেই অনুষ্ঠান দেখেন। হিন্দু-মুসলিম সহ সকল ধর্মের মানুষ এই মেলায় যোগদান করেন। অনুষ্ঠানের সূচনায় এসে তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী সায়নী ঘোষ এসআইআর নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘বিজেপি হল বাংলা জ্বালাও পার্টি, বিজেপি হিন্দুদের নয়, আবার মুসলিমদেরও নয়।
যে মতুয়ারা শান্তনু ঠাকুরের হাত ধরে বিজেপির ওপর আস্থা রেখেছিলেন, তাদের ভাঁওতাগুলি শুনে, তারা এখন বুঝতে পারছে এসআইআর এবং এনআরসির নাম করে বিজেপি একটা জঘন্য এবং নিকৃষ্টতম চক্রান্ত করছে, তার মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেকেই হতে চলেছে, আসামে যখন এনআরসি হয়েছিল তখন বহু মানুষের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েছিল। এখনো তারা ডিটেনশন ক্যাম্পে রয়েছে। বিজেপি কারো নয় বিজেপি শুধু পুঁজিবাদীদের। অর্থাৎ আদানি আম্বানিদের। খেটে খাওয়া গরীব মানুষদের সাথে নেই বিজেপি। তারা শুধু ধনী ব্যক্তিদের সাথেই রয়েছে শুধুমাত্র নিজেদের আখের গোছানোর জন্য’। এদিন প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে মেলার সূচনার পর বাউল গান গেয়ে সকলের মন জয় করেন সায়নি।





