বাংলায় নারীদের কোনও নিরাপত্তা নেই বলে বারবার দাবি করে তৃণমূল সরকারকে বিঁধে চলেছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। ঠিক সেই সময় পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের বিজেপি কর্মী সোমনাথ পালের কুকীর্তি প্রকাশ্যে আসার পর থেকে বিজেপি নেতারা এখন কার্যত মুখ লুকাচ্ছেন। ফোন করে এক যুবতীকে কুপ্রস্তাব দেওয়া থেকে শুরু করে প্রকাশ্যে অশ্লীল আচরণ করার অভিযোগ উঠেছে ওই বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত বিজেপি কর্মী সোমনাথ পালকে হন্যে হয়ে খুঁজছে জামালপুর থানার পুলিশ।
এই ঘটনা নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে আঙুল ওঠা শুরু হতেই বিজেপিকে তুলোধনা করা শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। জামালপুর ব্লকের জ্যোৎশ্রীরাম পঞ্চায়েত এলাকার একটি গ্রাম হল জাঙ্গিরপুর। বিজেপি কর্মী সোমনাথ পাল এই জাঙ্গিরপুর গ্রামেরই বাসিন্দা। জামালপুর থানার সন্নিকটে থাকা বিজেপি পার্টি অফিসেও সোমনাথের অবাধ যাতায়াত ছিল। অতি সম্প্রতি বিজেপির কাটোয়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি স্মৃতিকণা বসুর উপস্থিতে জামালপুরের বিজেপি পার্টি অফিসে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা জানানোর একটি অনুষ্ঠান হয়। সেই অনুষ্ঠানে দলের গণ্যমান্য নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে সোমনাথ পালকেও উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছে।
এছাড়াও বিজেপির ডাকে জামালপুরে মিটিং, মিছিল বা পথ অবরোধ কর্মসূচী যাই থাকনা কেন, সে সবেতেও সোমনাথকে প্রথম সারিতে উপস্থিত থাকতে দেখা যেত। জাঙ্গিরপুর গ্রামে বিজেপির হয়ে কর্তৃত্ব তিনিই করতেন। স্বামী পরিত্যক্তা এক মহিলা জামালপুর থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন যে, তিনি রোজগারের জন্য জামালপুর থানা থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূরে একটি মোমো দোকান চালান। মাঝে মধ্যেই বিজেপি নেতা সোমনাথ পাল তাকে ফোন করে নানান কু-প্রস্তাব দিত। রাস্তায় তাকে দেখতে পেলে জোর করে তার সাথে আলাপ করার চেষ্টা করত। বিষয়টি তার কাছে খুব বিরক্তিকর হয়ে ওঠে। তিনি বারবার সোমনাথ পাল কে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করলে গত ১৬ তারিখ সন্ধ্যাবেলায় তার দোকানে ক্রেতা সেজে এসে তাকে অশালীন ইঙ্গিত করে।
এই সময় তিনি দোকান ছেড়ে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করলে তার হাত ও মুখ চেপে ধরে তাকে বাধা দেয়। সেই সময় অন্য ক্রেতা দোকানে চলে আসায় তাকে ছেড়ে দিয়ে অশালীন ইঙ্গিত করে সোমনাথ পাল। সোমনাথ পালের এই আচরণে তিনি অপমানিত এবং লজ্জিত বোধ করছেন। বর্তমানে সোমনাথ পালের এই আচরণের জন্য তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। সোমনাথ পালের ভয়ে যদি তিনি দোকান না খোলেন তবে আগামী দিনে কিভাবে তিনি নিজের সংসার চালাবেন সেই চিন্তায় পড়েছেন। এই বিষয়ে তিনি প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়ে সোমনাথ পালের যথপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। জামালপুর থানার পুলিশ লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরই নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এবং অভিযোগকারী মহিলাকে সবরকম সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছে জামালপুর থানার পুলিশ।
যদিও এই বিষয়ে বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্রের দাবি, বিষয়টি জানার পরই তিনি খোঁজ নেন। এবং তিনি যেটা জানতে পারেন সোমনাথ পাল আগে তৃণমূলের সাথে যুক্ত ছিল বর্তমানে সে বিজেপি দলে যোগদান করেছে। বাংলায় এসআইআর শুরু হওয়ার আগেই বিভিন্ন দল থেকে বহু কর্মীরা দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করছে। এই সোমনাথ পাল তৃণমূলে থাকাকালীন তার চরিত্রে অনেক কলঙ্ক রয়েছে। বর্তমানে সে বিজেপিতে আসার চেষ্টা করছে। বিজেপির নানান মিটিং মিছিলে তাকে দেখা যায় তবে দলের কোন পদে তাকে রাখা হয়নি। সোমনাথ পাল যা কাণ্ড করেছে তা বিজেপি কখনোই সমর্থন করে না।
উত্তরপ্রদেশে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটলে সেখানকার প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নেয়, কিন্তু বাংলায় কোন ঘটনা ঘটলে তার কোন ব্যবস্থা নেয় না বাংলার প্রশাসন। এই ঘটনায় সোমনাথ পাল যা অন্যায় করেছে তার শাস্তি সে পাবে, তবে এই ঘটনায় বিজেপির সাথে কোন যোগ নেই। দলের কর্মীদের কাছে তিনি আবেদন করবেন যাতে এই ধরনের মানুষেরা দলে কোন জায়গা না পায়। তৃণমূল নেতা দেবু টুডু জানিয়েছেন। এটাই বিজেপির চরিত্র। সিপিএমের পচা মাল আর তৃণমূলের কিছু পচা মাল গিয়ে এখন বিজেপিতে যোগদান করেছে। এখন এদের চরিত্র গুলো প্রকাশ পাচ্ছে।





