বিহার বিধানসভা ভোটের আগে ভোটারদের মন জয়ে এনডিএ ঝড় তুলেছে প্রতিশ্রুতির বন্যায়। ১ কোটি চাকরি, ১ কোটি মহিলাকে ‘লাখপতি দিদি’ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা এবং কৃষকদের জন্য আর্থিক সহায়তার ঘোষণায় সরগরম পাটনা। শুক্রবার পাটনায় নীতীশ কুমার ও বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা একসঙ্গে প্রকাশ করলেন এনডিএর ইস্তেহার।
প্রথম দফার ভোটের মাত্র কয়েকদিন আগে এই ঘোষণা ঘিরে বেড়েছে রাজনৈতিক উত্তাপ। ইস্তেহারের মুখ্য প্রতিশ্রুতি নারী ও যুবকদের ঘিরে। নারীদের জন্য ‘লাখপতি দিদি প্রকল্প’-এর আওতায় ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মহিলা উদ্যোক্তাদের জন্য থাকবে ‘মিশন কোটিপতি’ প্রকল্প, যেখানে ব্যবসা সম্প্রসারণে দেওয়া হবে বিশেষ প্রণোদনা। এনডিএ জানিয়েছে, ক্ষমতায় ফিরলে এক কোটি মহিলাকে আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করে তোলাই হবে তাদের মূল লক্ষ্য। বেকার যুবকদের জন্যও এসেছে বড় ঘোষণা। ২০২০-র ইস্তেহারে ১৯ লাখ চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এনডিএ।
এবার সেটি এক লাফে বেড়ে হয়েছে ১ কোটি। দক্ষতা উন্নয়নের জন্য প্রত্যেক জেলায় গড়ে তোলা হবে মেগা স্কিল সেন্টার। রাজ্যকে গ্লোবাল স্কিলিং হাবে পরিণত করার কথাও বলা হয়েছে। এনডিএর দাবি, দক্ষতার ভিত্তিতে প্রতিটি যুবক-যুবতীকে চাকরির সুযোগ দেওয়া হবে।কৃষিক্ষেত্রেও একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকারপক্ষ। প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধি প্রকল্পের সঙ্গে মিলিয়ে কৃষকদের বছরে ৯ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছে। মরশুম অনুযায়ী প্রতিটি কৃষককে ৩ হাজার টাকা অতিরিক্ত দেওয়া হবে। একইসঙ্গে কৃষি উন্নয়নে ১ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগের অঙ্গীকার করেছে এনডিএ। ইস্তেহারে পরিকাঠামো খাতেও আসছে একাধিক উন্নয়ন পরিকল্পনা। ৭টি নতুন এক্সপ্রেসওয়ে, ৩,৬০০ কিলোমিটার রেললাইন আধুনিকীকরণ এবং চারটি শহরে মেট্রো পরিষেবা চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিজেপি-জেডিইউ জোট।
এছাড়া আরও তিনটি বিমানবন্দর নির্মাণ ও আন্তর্জাতিক উড়ান চালুর আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।জনকল্যাণমূলক পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে ১২৫ ইউনিট পর্যন্ত বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসা, বিনামূল্যে রেশন এবং ৫০ লক্ষ পাকা বাড়ি নির্মাণের প্রতিশ্রুতি।তবে প্রতিদ্বন্দ্বী মহাজোট এনডিএর প্রতিশ্রুতিগুলিকে তীব্রভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আরজেডি নেতা সঞ্জয় ঝা অভিযোগ করেছেন, গতবার বিজেপির দেওয়া বহু প্রতিশ্রুতিই এখনও অপূর্ণ।
চাকরি ও আবাসনের ক্ষেত্রে শূন্য অগ্রগতি নিয়েই তেজস্বী যাদবের নেতৃত্বে তারা এবার ভোটে নেমেছে। মহাজোটের পাল্টা প্রতিশ্রুতি,প্রত্যেক পরিবারে একজনের সরকারি চাকরি এবং প্রতিটি মহিলাকে মাসে আড়াই হাজার টাকার আর্থিক সহায়তা।বিহারের ভোটযুদ্ধ তাই এখন প্রতিশ্রুতির দৌড়ে রূপ নিয়েছে। একদিকে উন্নয়ন, কর্মসংস্থান আর নারী স্বনির্ভরতা অন্যদিকে বিরোধীদের প্রশ্ন, এতদিন ক্ষমতায় থেকেও নীতীশ কুমার এসব করেননি কেন। ভোটের ময়দানে এই প্রশ্নের উত্তরই নির্ধারণ করবে আসন্ন নির্বাচনের ফলাফল।





