রবিবাসরীয় সকালে রামনগরে ফের পুরনো মেজাজে ধরা দিলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এক দিকে পুলিশ-প্রশাসনকে বেনজির আক্রমণ, আর অন্য দিকে নিচুতলার কর্মীদের জন্য সংগঠনের ‘দাওয়াই’— ‘চায়ে পে চর্চা’ কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে এভাবেই দলের অন্দরে ঝাঁঝ বাড়ালেন তিনি। যুবভারতী স্টেডিয়ামে সাম্প্রতিক গোলযোগের প্রসঙ্গ টেনে এ দিন রাজ্য পুলিশ ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন মেদিনীপুরের প্রাক্তন সাংসদ। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যের পুলিশ কার্যত শাসক দলের ‘দলদাসে’ পরিণত হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার চেয়ে ‘তোষণনীতি’ই এখন প্রশাসনের প্রধান কাজ। দিলীপ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, প্রশাসনিক ব্যর্থতার কারণেই রাজ্যে অরাজকতার পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। ‘পুলিশের ভূমিকা লজ্জাজনক’, মন্তব্য করেন তিনি। তবে এ দিনের মূল লক্ষ্য ছিল দলের সংগঠনকে তৃণমূল স্তর থেকে মজবুত করা। রামনগরে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের ভিড়ে ঠাসা আসরে দিলীপ স্পষ্ট বার্তা দেন— শুধু বড় সভা বা সোশ্যাল মিডিয়ার উপরে নির্ভর করলে চলবে না। কর্মীদের সরাসরি মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে। তাঁর পরামর্শ— মানুষের অভাব-অভিযোগের কথা মন দিয়ে শুনতে হবে এবং দলের বার্তা বুথ স্তরে পৌঁছে দিতে হবে।
কর্মীদের মাঠে ময়দানে নেমে লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সংগঠনকে নীচুতলা থেকে শক্তিশালী না করতে পারলে আগামী দিনে লড়াই কঠিন হবে। এ দিনের কর্মসূচিতে দিলীপের সঙ্গে জেলা, ব্লক ও মণ্ডল স্তরের নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। কর্মীদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনায় তাঁদের সুবিধা-অসুবিধার কথাও শোনেন তিনি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, রামনগরের এই ‘চায়ে পে চর্চা’ কেবল একটি সাধারণ আড্ডা ছিল না, বরং আসন্ন কঠিন লড়াইয়ের আগে নিচুতলার সংগঠনকে ঝাঁজালো করে তোলার জন্য দিলীপ ঘোষের এটি একটি বিশেষ কৌশল। রবিবারের সকালে দিলীপের এই ‘মরিয়া’ মেজাজ কর্মীদের কতটা উজ্জীবিত করতে পারে, এখন সেটাই দেখার।





